Thursday, August 3, 2017

সঠিক যোগ্যতার ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো ? ... ডাক্তার চিনে নিন ( পর্ব-3, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক )

সঠিক যোগ্যতার ডাক্তারের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো ? ... 
ডাক্তার চিনে নিন ( পর্ব-3 )

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক পরিচিতি








(ধারাবাহিক রচনার 3য় পর্ব)
আমরা রোগাক্রান্ত অবস্থায় চিকিৎসা গ্রহনের জন্য ডাক্তারের কাছে যাই। কিন্ত আমরা কি বুঝি কোন ডাক্তারের যোগ্যতা কতখানি? সঠিক যোগ্যতার ডাক্তার নির্বাচন না করলে হয়ত রোগীর অযথা ভোগান্তি হতে পারে। তাই ডাক্তারদের যোগ্যতা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে।


হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার পরিচিতি
বহির্বিশ্বের অনেক দেশের মত বাংলাদেশেও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা জনপ্রিয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শিশু, যুবক, বৃদ্ধ, মহিলা, পুরুষ, ধুমপায়ী, অধুমপায়ী সকল ধরনের মানুষের জন্যই সমানভাবে কার্যকর। এলোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা একসাথে নেয়া যায়, এতে কোন সমস্যা নেই, বরং অনেক ক্ষেত্রেই রোগ দ্রুত আরোগ্য হয় কিংবা ধীরে ধীরে এলোপ্যাথিক ঔষধের প্রয়োজন হ্রাস পায় । শুধু তাই নয় এলোপ্যাথিতে অপারেশনযোগ্য অনেক রোগও বিনা অপারেশনে হোমিওপ্যাথিতে আরোগ্য হয়।তাই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের যোগ্যতা সমপর্কে জানতে হবে। তিন ধরনের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দেখা যায়-

ক) সাধারণ চিকিৎসক : মূলত গ্রাম ও মফস্বল শহরে এ ধরনের চিকিৎসক দেখা যায়। এ ধরনের চিকিৎসকদের কোন সনদ নেই কিংবা সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণ সনদ থাকতে পারে। মূলত এদের দায়িত্ব হলো রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে জনগনকে সচেতন করা, বিভিন্ন স্বাস্থ্য পরামর্শ প্রদান করা ও প্রয়োজনে প্রাথমিক চিকিৎসা (FIRST AID)প্রদান করা। 
ধরনের চিকিৎসকগণ প্রাথমিক জ্ঞান সীমিত এবং শুধু মাত্র প্রাথমিক পর্যায়ের অতিসাধারণ রোগ চিকিৎসার উপযুক্ত। এ ধরনের চিকিৎসকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান করলে তারা আরো উন্নত স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে পারবে।

খ) ডিপ্লোমা : আমাদের দেশে ডি.এইচ.এম.এস হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের চিকিৎসকগণ বিভিন্ন ডিপ্লোমা পর্যায়ের ’হোমিওপ্যাথি কলেজ’ হতে কোর্স সম্পাদন করে হোমিওপ্যাথি বোর্ড স্বীকৃত ডিপ্লোমা সনদ ও রেজিস্ট্রেশন লাভ করেন। এ ধরনের চিকিৎসকগন সাধারণ পর্যায়ের রোগ চিকিৎসা করার যোগ্যতা রাখেন তবে প্রশিক্ষণহীনদের তুলনায় উন্নত। এ ধরনের চিকিৎসকের নিকট জটিল রোগের ( যেমন- কিডনী রোগ, হার্টের রোগ, টিউমার, পাথর, ইত্যাদি ) চিকিৎসা করানো যাবেনা ।

গ) এমবিবিএস সমমান বা স্নাতক : আমাদের দেশে বি.এইচ.এম.এস. (ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এন্ড সার্জারী) ডিগ্রীকে এমবিবিএস সমমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ ধরনের চিকিৎসকগণ দেশের একটি সরকারী ও একটি বেসরকারী ’হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল’ কলেজ হতে ৬ বছর মেয়াদী কোর্স (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রিত) সম্পাদন করার পর ’স্বাস্থ্য অধিদপ্তর’ হতে রেজিস্ট্রেশন লাভ করেন। তাই যে কোন রোগে (বিশেষত জটিল ও পুরাতন রোগে) হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার জন্য এ ধরনের চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
আমাদের দেশে হোমিওপ্যাথিতে কোন স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেই। তাই বি.এইচ.এম.এস ই আমাদের দেশে হোমিওপ্যাথিতে সর্বোচ্চ ডিগ্রী। উল্লেখ্য বিএইচএমএস ডিগ্রী অর্জন করার পর অনেকেই এদেশ কিংবা বিদেশ হতে উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকেন। উচ্চতর প্রশিক্ষণের মধ্যে কিছু স্বীকৃত আবার কিছু স্বীকৃত নয়। এদের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে- হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, বন্ধ্যাত্ব, শিশু স্বাস্থ্য, মানসিক রোগ, চর্মরোগ ইত্যাদি।
এ পর্যায়ের চিকিৎসকদের পদমর্যাদা অনুসারে শ্রেণীবিন্যাস ( উচ্চক্রম থেকে নিম্নক্রম) করা যেতে পারে। যেমন- অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, সহকারী অধ্যাপক, মেডিকেল অফিসার/প্রভাষক। 
উল্লেখ্য বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারী হাসপাতালে ( উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে) এ ধরনের চিকিৎসক ’মেডিকেল অফিসার’ হিসেবে কর্মরত আছেন।


ভাল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক যেভাবে চিনবেন
আমাদের দেশে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার নামে প্রতারনা বেশি হয় । তাই বলে এই চিকিৎসা পদ্ধতি এড়িয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ভাল মানের চিকিৎসক খুঁজতে হবে। এমবিবিএস সমমান (বিএইচএমএস) চিকিৎসকগনই উপযুক্ত। হোমিওপ্যাথিক নির্বাচন সংক্রান্ত কিছু নির্দেশনা-

 এমবিবিএস সমমান (বিএইচএমএস) ডিগ্রীধারী চিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নেয়াই উত্তম।
 যে চিকিৎসক বলে হোমিও চিকিৎসার জন্য টেস্ট করার প্রয়োজন নেই তার নিকট চিকিৎসা নেয়া যাবে না।
 যে চিকিৎসক আপনাকে গ্যারান্টি দিয়ে চিকিৎসা করতে চাইবে তার কাছে কখনোই চিকিৎসা নেয়া যাবে না।
 যে চিকিৎসক বলে যে হোমিওপ্যাথি ও এলোপ্যাথি একসাথে নেয়া যাবে না তার নিকট চিকিৎসা নেয়া যাবে না। 
 এলোপ্যাথিক চিকিৎসক যে ঔষধ খেয়ে যেতে বলেছেন সে ঔষধ কোন হোমিওচিকিৎসক হঠাৎ করে বন্ধ করতে বললে সেই হোমিওচিকিৎসকের নিকট চিকিৎসা নেয়া যাবে না।


ডাঃ আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম

No comments:

Post a Comment