Thursday, August 3, 2017

নবজাতকের যত্ন নিতে গিয়ে তার ক্ষতি করছেন না তো?

নবজাতকের যত্ন নিতে গিয়ে তার ক্ষতি করছেন না তো? 








নবজাতকের ব্যপারে সকলেই যত্নবান। মা-বাবা, নানা-নানী, দাদা-দাদী, অন্যান্য অনেকেই এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতনতার পরিচয় প্রদান করেন। তবে মজার বিষয় হলো নবজাতকের যত্ন নিতে গিয়ে কিছু কিছু সময় ভালর পরিবর্তে খারাপ কাজটাই করা হয়ে থাকে। 

অনেকেই নবজাতকের কাপড় জীবানুমুক্ত করার জন্য স্যাভলন বা ডেটল ব্যবহার করে থাকেন। এটি মোটেই ঠিক না । কাপড়ে লেগে থাকা স্যাভলন বা ডেটল নবজাতকের ত্বকের ক্ষতি করতে পারে । বিশেষত এলার্জিক rash হতে পারে। এলার্জিক র্যা স হলে ত্বকে হামের মত লালচে ছোট ছোট গুটি হতে পারে বা ত্বক লালচে হয়ে যেতে পারে। এলার্জিক র্যা স এর স্থানে চুলকায় ফলে শিশু অস্বস্তিতে ভোগে । ফলশ্রুতিতে শিশু বেশি বেশি কান্নাকাটি করতে পারে। 

তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে নবজাতকের পরিধেয় ও ব্যবহৃত কাপড় কিভাবে জীবানুমুক্ত করা যায়? উত্তরে বলব নিচের প্রক্রিয়ায় নবজাতকের কাপড় চোপড় জীবানুমুক্ত করা যায় ।
নবজাতকের কাপড় চোপড় , ন্যাকড়া ইত্যাদি ধোয়ার জন্য –
1. নবজাতকের ব্যবহৃত কাপড় চোপড়ের মধ্যে পায়খানা লেখে থাকা কাপড়গুলো রাখার সময়ই একদম আলাদাভাবে রাখতে হবে। প্রস্রাব ও অন্যান্য কাপড়গুলো একসাথে রাখা যেতে পারে তবে আলাদা রাখাই উত্তম।
2. নবজাতকের কাপড় ধোয়ার জন্য জীবানুমুক্ত পানি, যেমন- টিউবয়েলের পানি ব্যবহার করতে হবে (পৌরসভার সাপ্লাই পানিও ব্যবহার করা যাবে)। পুকুড় ডোবার পানি ব্যবহার করা যাবেনা।
3. প্রস্রাবের কাপড় প্রথমে শুধু পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। পায়খানা লেগে রয়েছে এমন কাপড় থেকে ব্রাশ (অথবা অন্য কিছু) ব্যবহার করে খুব ভাল ভাবে পায়খানা দূর করতে হবে ।
4. তারপর উন্নত মানের ডিটারজেন্ট পাউডারে প্রস্রাব ও পায়খানার কাপড় আলাদা ভাবে 15-20 মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। প্রস্রাবের কাপড়ের সাথে অন্যান্য কাপড়ও দেয়া যেতে পারে। তারপর ভালকরে পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
5. কাপড়গুলো কড়া রোদে শুকাতে হবে। কড়া রোদ না পাওয়া গেলে কাপড় বাতাসে ভালভাবে শুকাতে হবে। সুবিধা থাকলে বাতাসে শুকানো কাপড় ইস্ত্রি করে নিলে ভাল হয়।
6. কাপড়গুলো ভালভাবে শুকিয়ে গেলে বাড়ীর অন্যান্য কাপড়ের সাথে না মিশিয়ে আলাদা ভাবে সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হবে।
শিশুর মায়ের বা পরিচর্যাকারীর কাপড়ও এভাবে পরিস্কার করতে হবে।
মনে রাখবেন … বাজার থেকে কেনা নতুন কাপড় না ধুয়ে কখনোই নবজাতকের গায়ে দিবেন না । এতে এলার্জিক রিয়্যাকশন, কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস সহ অন্যান্য চর্মরোগ হতে পারে।
আরেকটি কথা- নবজাতকের গোসলের পানিতে কখনোই স্যাভলন বা ডেটল দেবেনে না। এতে সমস্যা আরো বেশি হতে পারে।

বিঃদ্রঃ সাম্প্রতিক কালে ম্যাক হেলথ সার্ভিসে ‘গর্ভবতীর যত্ন’ ও ’নবজাতকের যত্ন’ সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করার একটি উদ্যোগ নিয়েছে। যার ফলে প্রশিক্ষিত ব্যক্তি সঠিক ভাবে গর্ভবতীর যত্ন নিতে পারবেন, নবজাতকের যত্ন নিতে পারবেন। প্রশিক্ষণটি শশুধুমাত্র শেরপুর জেলার সদরে পরিচালিত হবে। আগ্রহীগণ ই ইমেইলে প্রি-রেজিস্ট্রেশন করতে পারেন। প্রি রেজিস্ট্রেশনের সময় প্রশিক্ষনের বিষয়বস্তু-(গরভবতীর যত্ন / নবজাতকের যত্ন যেকোন একটি বা উভয় ), নিজের নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর লিখতে হবে। প্রি রেজিস্ট্রেশনকারীদের ইমেইলে বিস্তারিত জানানো হবে।  ইমেইলটি হলো-drmabdullahaq@gmail.com

বাংলাদেশের সকল শিশুর সুস্থতা কামনা করছি।

ডাঃ আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম
প্রাক্তন সহকারী অধ্যাপক : বাংলাদেশ মেডিকেল ইন্স. ঢাকা।
পেডিয়াট্রিকস ( শিশুরোগ) সহ শতাধিক মেডিকেল পুস্তক রচয়িতা ( বাংলাদেশ ও ভারতে পঠিত )

No comments:

Post a Comment