Thursday, August 3, 2017

রোজার মাসে কয় বেলা ঔষধ খাচ্ছেন ? ঠিক হচ্ছে তো ?

রোজার মাসে কয় বেলা ঔষধ খাচ্ছেন ? ঠিক হচ্ছে তো ?


সাধারণত আমরা ডাক্তারগন রোগীকে দিনে দুই বেলা কিংবা দিনে তিন বেলা কিংবা শুধু সকালে কিংবা শুধু রাতে ঔষধ প্রদান করে থাকি। আবার কখনো কখনো খালি পেটে, খাবার পর, ভরা পেটে, খাবার এক ঘন্টা পর হিসেবেও ঔষধ দিয়ে থাকি। রোগীদের কে এই ঔষধ সেবন পদ্ধতি সম্পর্কে জানাটা জরুরী।
সাধারণভাবে ঔষধ সেবনের সময়
1) দিনে দুই বেলা : দিনে দুই বেলা ঔষধ খাবার কথা বলা হলে তা হবে সকাল + রাত। এখানে দুই বেলার মধ্যে পার্থক্য হলো 12 (বার) ঘন্টা নূণ্যতম 9-10 ( নয়-দশ) ঘন্টা।
2) দিনে তিন বেলা : তিন বেলা বলতে সকাল + দুপুর + রাত। প্রকৃত পক্ষে প্রতি বেলার মাঝে আট ঘন্টা পার্থক্য থাকতে হয়, তবে তা নূন্যতম 6 (ছয়) ঘন্টা।
3) দিনে এক বার সকালে : এখানে সকালের ঔষধ বলতে দুটো বিশেষ দিক বোঝাতে পারে। ক) সারারাত অভুক্ত থেকে সকালে খেয়ে তারপর ঔষধ সেবন করা। খ) ঔসধ সারাদিন ধরে কাজ করবে তাই সকালে সেবন করা।
4) দিনে একবার রাতে : এখানে রাতে ঔষধ বলতেও দুটো বিশেষ বিষয় বোঝাতে পারে। ক) ঘুমানোর পূর্বে সেবন করলে এবং ঘুমিয়ে গেলে ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কম অনূভূত হবে। খ) এগুলো খেলে ঘুম আসতে পারে তাই ঘুমানোর পূর্বে সেবন করা।
রোজার মাসে রোগীগন সাধারণত তিন বেলা এভাবে হিসেব করেন- 1) ইফতারের পর 2) রাতের খাবার 3) সেহরী । এখানে সন্ধ্যা 7 টা থেকে রাত 3.30 মিনিট পর্যন্তই (আট ঘন্টা 30 মিনিট) তিন বেলা হিসেব করতে হয়। সঠিক ঔষধ সেবন পদ্ধতি অনুযায়ী এখানে তিন বেলা হতে পারে না, বড়জোড় দুই বেলা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে যে সকল সমস্যা হতে পারে-
 তাহলে যদি রোগী নিজের মত করে তিন বেলা হিসেব করে ঔষধ সেবন করে তবে তার মাত্রা বেশি হয়ে যেতে পারে, ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বেশি হতে পারে, আবার রোগী যদি নিজে থেকেই একবেলা কমিয়ে দেয় তবে মাত্রা সঠিক নাও হতে পারে।
 যে ঔষধ অনেক্ষণ অভূক্ত থাকার পর সেবন করতে হয় (পূর্বের নিয়মে সকালে)তা যদি সেহরীর সময় খাওয়া হয় তবে তা ঠিক হয় না, যদি ইফতারের পর খাওয়া হয় তবে ঠিক হতে পারে (যদি চিকিৎসক পরামর্শ দেন)।
 যে সকল ঔষধে ঘুম হতে পারে সেগুলো যদি রাতে খাওয়া হয় তবে সেহরীর সময় উঠতে সমস্যা হবে। আবার না খেলে হয়ত অন্য সমস্যা হতে পারে। আবার সেহরীর সময় খেলে দিনের বেলা কাজ কর্মে ব্যঘাত ঘটতে পারে।
তাই রোজার পূর্বে প্রতিটি রোগীর (বিশেষত যারা দীর্ঘদিন যাবৎ ঔষধ সেবন করছেন এবং তা ধারাবাহিক) উচিৎ সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে ঔষধের ডোজ (মাত্রা) পুণঃ নির্ধারন, ঔষধ পরিবর্তন ( যদি প্রয়োজন হয়)ইত্যাদি সম্পন্ন করা যেন রোজার মাসে রোজা রাখতে সমস্যা না হয়।
যদি সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক দুরে থাকেন কিংবা তা সময় সাপেক্ষ হয় তবে নিকটস্থ একজন একই বিশেষঙ্গের পরামর্শ নিতে পারেন। না পাওয়া গেলে একজন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। তাও সম্ভব না হলে অভিঙ্গ এমবিবিএস ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ডাক্তার কে বলতে হবে রোগী রোজা রাখতে চাচ্ছেন, তা সম্ভব কি না? সম্ভব হলে ঔষধের মাত্রা কি হবে। পরবর্তীতে রোগী তার পূর্বের চিকিৎসকের নিকট পুনরায় যেতে পারবে।
এই মাহে রমজান মাসে সকলেই সুস্থ থাকুন। সুষ্ঠুভাবে রোজা পালন করুন। মহান আল্লাহ পাকের নিকট এই প্রার্থনা করছি।
ডাঃ আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম

No comments:

Post a Comment