Saturday, August 12, 2017

জন্মনয়িন্ত্রন পদ্ধতি সম্পর্ক ধারণা; পর্ব-4 : গর্ভধারণ







প্রেগন্যান্সি বা গর্ভধারণ
এমন একটি অবস্থা যেখানে জরায়ুতে ভ্রুন বৃদ্ধি পেতে থাকে সাধারণত গর্ভকাল হলো দিনের হিসেবে ২৮০ দিন বা সর্বশেষ মাসিকের তারিখ হতে ক্যালেন্ডার মাস দিন বা ৪০ সপ্তাহ  গর্ভ ধারন কালকে তিনটি অংশে বিভক্ত করা হয় প্রতিটিকে ট্রাইমিস্টার বলা হয় ট্রাইমিস্টার গুলো হলো
) প্রথম ট্রাইমিস্টার: প্রথম হতে বারতম সপ্তাহ পর্যন্ত
) দ্বিতীয় ট্রাইমিস্টার: ১৩ তম হতে ২৮ তম সপ্তাহ পর্যন্ত
) তৃতীয় ট্রাইমিস্টার: ২৯ তম সপ্তাহ হতে গর্ভকালের শেষ সময় পর্যন্ত


গর্ভধারনের প্রক্রিয়া
গর্ভধারনের প্রক্রিয়াকে নিম্নলিখিত ধাপে প্রকাশ করা যেতে পারে
) একজন প্রজনন ক্ষম মহিলা যখন কোন জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি অবলম্বন ব্যতিরেকে কোন পুরুষের সাথে  যৌন  মিলন করে তখন মহিলার ভ্যাজাইনাতে পুরুষের সীমেন সঞ্চিত হয় এবং যৌন মিলনের সময় আভ্যন্তরিন স্ত্রী জননাঙ্গ সমূহে প্রচর তরল ক্ষরিত হয়

) এই সীমেনে  বিদ্যমান স্পার্ম বা শুক্রানু (স্বাভাবিক ভাবে সংখ্যায় কয়েক কোটি) স্ত্রী আভ্যন্তরিন জননাঙ্গে বিদ্যমান তরল পদার্থের মধ্যে সাঁতার কাটতে থাকে আবার যৌন মিলনের সময় মহিলাদের আভ্যন্তরিন জননাঙ্গে ভ্যাজাইনা হতে ফ্যালোপিয়ান টিউব সঞ্চালন হতে থাকে ফলে শুক্রানু তরলের মধ্যে সাতার কাটতে কাটতে ফ্যালোপিয়ান টিউবের দিকে যেতে থাকে এভাবে শুক্রানু স্ত্রী জননাঙ্গের অভ্যন্তরে সাধারণত ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত অবস্থানরত অবস্থায় বেঁচে থাকতে পারে

) যদি সময়ে মহিলার ওভুলেশন ঘটে থাকে এবং পুরুষের স্পার্ম বা শুক্রানু সক্রিয় থাকে তবে ওভাম বা ডিম্বানুর সাথে স্পার্ম মিলিত হয়ডিম্বানুর সাথে একটি মাত্র স্পার্ম মিলিত হতে পারে।

) ওভাম স্পার্মের মিলনের ফলে ওভামটি নিষিক্ত হয় এবং জাইগোট সৃস্টি করে সাধারণভাবে ফ্যালোপিয়ান টিউবের অভ্যন্তরে এই নিষিক্তকরন ও জাইগোট সৃস্টির ঘটনা  ঘটে

) এই জাইগোট  সাধারণ ভাবে ৬ষ্ঠ - ৮ম দিনে ইউটেরাস বা জরায়ুতে আসে এবং সেখানে প্রথিত হয় এই প্রক্রিয়াকে ইমপ্লান্টেশন বলা হয়

) ইমপ্লান্টেশন  হওয়ার পর জাইগোট ভ্রুনে রূপান্তরিত হয় এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি বিকাশের মাধ্যমে পুর্ণাঙ্গ নবজাতকে রূপান্তরিত হয় এবং  পুর্নাঙ্গ শিশু হিসেবে ভুমিষ্ট হয়



চিত্র: গর্ভাবস্থার সৃস্টি ( 1- ওভুলেশন, 2-ফার্টিলাইজেশন, 3- জাইগোট সৃস্টি, 4-7 ভ্র ুণে রূপান্তর ,  ইমপ্লান্টেশন )






চিত্র: গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি






চিত্র: গর্ভাবস্থায় শিশুর বৃদ্ধি






গর্ভকালীন সময় মাসিক
যদি ডিম্বানু নিষিক্ত না হয় তবে আকস্মিক ভাবে রক্তের এস্ট্রোজেন প্রোজেস্টেরনের পরিমান কমে যায় বলে ওভুলেশনের পর ১৪ তম দিনে মাসিক (রক্তক্ষরণ) শুরু হয়
যদি ডিম্বানু নিষিক্ত হয় তবে তা পরবর্তীতে প্লাসেন্টা বা অমরা বা গর্ভফুল সৃষ্টি করে  প্লাসেন্টা বা অমরা বা গর্ভফুল প্রচুর পরিমান হিউমেন কোরিওনিক গোনাডোট্রপিন হরমোন নিঃসরন করে যার প্রভাবে  এস্ট্রোজেন প্রোজেস্টেরন  নিঃসরনের কোন পরিবর্তন ঘটেনা এবং ফলশ্রুতিতে এন্ডোমেট্রিয়ামের বৃদ্ধি চলতে থাকে মাসিক বাঁধাগ্রস্ত হয় তাই গর্র্ভধারনকালীন সময়ে মাসিক হয়না



গর্ভধারণ সম্পর্কিত কিছু শব্দ পরিচিতি

প্রসব  : বাচ্চা জন্মদানের প্রক্রিয়াকে প্রসব বা পারচুরিশন বলে। গর্ভস্থ শিশু পরিণত হয়ে গেলে প্রসব ঘটে। প্রসব প্রক্রিয়া প্রাকৃতিক ভাবে ভ্যাজাইনা দিয়ে হতে পারে আবার কৃত্রিম ভাবে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে পেট কেটে বের করে আনা হতে পারে। 

এবরশন বা গর্ভপাত : গর্ভস্থ শিশু ২৮ সপ্তাহ হবার পূর্বে গর্ভধারণের সমাপ্তি (অর্থাৎ ভ্যাজাইনা দিয়ে গর্ভস্থ উৎপাদি বের হয়ে আসা ) হলে তাকে এবরশন বা গর্ভপাত  বলা হয়।  প্রাকৃতিক ভাবেও হতে পারে আবার কৃত্রিম ভাবেও গটানো যেতে পারে।

পিউরপেরিয়াম : বাচ্চা প্রসবের পরবর্তী সপ্তাহকে পিউরপেরিয়াম বলে সময়ে  গর্ভকালীন সময়ে পরিবর্তিত অঙ্গ সমুহ (জরায়ু সংশ্লিষ্ট) স্বাভাবিক অবস'ায় (গর্ভ পূর্ববর্তী) ফিরে আসে


ল্যাকটেশন বা স্তন্যদান : স্তনের অভ্যন্তরে দুগ্ধ নিঃসরন থেকে শুরু করে বৃন্ত দ্বারা বাইরে বের হওয়া পর্যন্ত সকল প্রক্রিয়ার সমন্বিত নাম স্তন্যদান সাধারণত শিশু ঠিকমত মায়ের বুকের দুধ খেলে প্রসবের মাস পর্যন্ত সর্বোচ্চ ল্যাকটেশন ঘটে




এই পর্বের এখানেই সমাপ্তি । আগামী পর্বে রয়েছে আমাদের দেশে প্রচলিত জন্ম নিয়ন্ত্রন পদ্ধতি। 



পূর্ববর্তী পর্বসমূহ








সতর্কীকরণ 



[ সর্বস্বত্ত সংরক্ষিত; কপিরাইটকৃত রচনা।  রচয়িতার লিখিত অনুমতি ব্যতিত এই রচনা বা এর কোন অংশ বিশেষের অনুবাদ বা কোন প্রকারে এর অনুলিপি (যেমন- মুদ্রণ, ফটোস্ট্যাট, কম্পিউটার কম্পোজ বা অন্য কোন উপায়ে) তৈরি, সংরক্ষণ, বিক্রয়, বিতরণ, নিয়মবহির্ভূতভাবে কোন পুস্তকে বা প্রকাশনায় ব্যবহার কিংবা ওয়েব সাইটে প্রকাশ বাংলাদেশ কপিরাইট আইন ২০০৫ অনুযায়ী  শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে বিবেচিত হবে।  ]

উপরোক্ত রচনাটি ডাঃ আব্দুল্লাহ আল কাইয়ুম রচিত প্রকাশিতব্য পুস্তক ’’জন্মনিয়ন্ত্রন ’’ থেকে নেয়া হয়েছে।

তবে কোনরূপ পরিবর্তন না করে লিংক হিসেবে ফেসবুকে বা ইন্টারনেটে শেয়ার করা যাবে।
কপি-পেস্ট আইনত দন্ডনীয় বলে বিবেচিত হবে ।







No comments:

Post a Comment